'আ'উযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বোয়ানির রাজীম' 
যাদু চর্চা করা কুফুরি। যাদু শিক্ষা করা এবং শিক্ষা দেওয়া উভয়ই হারাম।
যাদুকরদের শাস্তির দায়িত্ব রাষ্ট্রপ্রধানের; জনগণের নয়।
আর, যদি যাদুকর যাদু বিদ্যা ত্যাগ করে তওবা করার ইচ্ছা করে,
তবে তাকে তওবা করার সুযোগ দিতে হবে। এবং তার তওবা গ্রহণযোগ্য।
ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী (রহঃ) তাফসীরে কাবীরের মধ্যে যাদুকে ৮ ভাগে বিভক্ত করেছেন।
প্রথম প্রকারঃ নক্ষত্র পূজারীদের যাদু। তারা সূর্যের চতুপার্শ্বে ঘূর্ণায়মান সাতটি নক্ষত্রকে পূজা করতো। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, উক্ত সাতটি নক্ষত্রই মহা বিশ্বের নিয়ন্ত্রক। উহারাই মঙ্গল-অমঙ্গল ঘটিয়ে থাকে।  (অথচ, আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলাই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক ও দাতা। )
দ্বিতীয় প্রকারঃ এ প্রকার যাদু হলো যারা স্বীয় আত্মার দৃঢ়তার সাহায্যে অপরের অন্তরকে প্রভাবান্বিত করে থাকে। অর্থাৎ, মানুষের মনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার কার্যে কোন কোন যাদুকরের আত্মা জড় উপকরণের সাহায্য গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।
তৃতীয় প্রকারঃ পৃথিবীতে বসবাসকারী আত্মার সাহায্যে সম্পাদিত কার্য্যাবলী; অর্থাৎ, জ্বীন-শয়তানকে বশে আনার মাধ্যমে- যে যাদুকে "আ'মালুত তাসখীর" বলা হয়। (অর্থাৎ, বশীকরণ প্রক্রিয়ার যাদু- যাকে 'হিপনোটিজম' বলা হয়। )
চতুর্থ প্রকারঃ এ প্রকারের যাদু হলো দৃষ্টি বিভ্রান্তমূলক যাদু। এই প্রকারের যাদুতে যাদুকর দর্শকদের চক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে তাদের দৃষ্টির সামনে একটি ঘটনাকে আরেকটি ঘটনারূপে প্রতীয়মান করে।
পঞ্চম প্রকারঃ জ্যামিতিক নিয়মে বিন্যস্ত একাধিক বস্তুর মাধ্যমে প্রকাশিত। যেমন- কতগুলো জড় বস্তুর সমন্বয়ে একটি আকৃতি নির্মাণ করা।
ষষ্ঠ প্রকারঃ বিভিন্ন দ্রব্যগুণের সাহায্যে প্রদর্শিত অলৌকিক ও বিস্ময়কর ঘটনা। এ কথা অস্বীকার উপায় নাই যে, আল্লাহ্‌ তা'আলা বিভিন্ন দ্রব্যের মধ্যে বিভিন্ন রূপ, বৈশিষ্ট্য ও গুণাগুণ সৃষ্টি করেছেন।
সপ্তম প্রকারঃ এ প্রকার যাদু হলো মিথ্যা দাবির মাধ্যমে মানুষের মনে অমূলক ভীতি সৃষ্টি করার প্রক্রিয়া। এ প্রকারের যাদুর ভিত্তি হচ্ছে মিথ্যা। যাদুকরের দাবি সে ইসমে আযম জানে।
অষ্টম প্রকারঃ এ যাদু হলো সূক্ষ্ণ পন্থায় চোগলখোরী করে একের বিরুদ্ধে অপরকে উত্তেজিত করে দেয়ার প্রক্রিয়া। এই প্রকারের যাদু মানুষের মধ্যে বহুল প্রচলিত।
আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের সবাইকে দুনিয়ার বালা-মুসীবত এবং আখিরাতের আযাব থেকে হেফাজত করুন।  আমীন।
***