লক্ষ জনতার চোখের পানিতে ও পীর সাহেব কেবলার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হলো সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের ২ দিন ব্যাপী বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল

সুরিপু ও কুরিপুসমূহের পরিচয় এবং কুরিপুসমূহের ধ্বংসের পন্থা

 মানুষের মধ্যে কতকগুলি কুরিপু আছে, সেইগুলিকে ধ্বংস করা ফরজ, যেহেতু উহারা মানুষকে গোনাহের কার্যে লিপ্ত করিয়া জাহান্নামি করিয়া থাকে; নফি এছবাত(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ -এর জিকির) দ্বারা অন্তরের কুরিপু সমূহ দূরীভূত হইয়া থাকে।
নিম্নে তাদের বর্ণনা দেওয়া গেল। যথা:-

(১) তামা- অদৃশ্য বস্তুর প্রতি আকাঙ্খা।
(২) হেরছ- উপস্থিত বস্তুর প্রতি লোভ, ভাল-মন্দ বিচার না করিয়া লাভ করিবার ইচ্ছা।
(৩) বোখল- কৃপণতা।
(৪) হারাম- শরীয়ত ও তরিকত অনুযায়ী নিষিদ্ধ কাজ।
(৫) গীবত- পশ্চাতে বা অগোচরে পরনিন্দা।
(৬) কেজব- মিথ্যা আচরণ।
(৭) হাছাদ- হিংসা বা পরশ্রীকাতরতা।
(৮) কিবর- অহঙ্কার বা আত্নগরীমা।
(৯) রিয়া- ভন্ডামী, লোক দেখান এবাদত ইত্যাদি।
(১০) কীনা- আন্তরিক শত্রুতা পোষণ করা।
(১১) ওজব- নিজ যোগ্যতা বা সৎকার্যের জন্য আত্নগরীমা।
উল্লিখিত কুরিপুগুলি মানুষের প্রধান শত্রু, যে কোন গোনাহের কার্য উহাদের যে কোন একটির প্রতারণায় হইয়া থাকে, এই সকল দমন করিবার প্রধান অস্ত্র হইল নফি এছবাত জিকির।
দশটি সৎগুণ এবং ইহাদিগকে অর্জন করার নিয়ম:
(১) তাওবা- পাপ হইতে বিরত থাকা।
(২) এনাবত- খোদার দিকে প্রত্যাবর্তন।
(৩) জুহদ- পার্থিব বাসনা ত্যাগ করা।
(৪) অরা- পরহেজগার বা ধর্মভীরু হওয়া।
(৫) শোকর- কৃতজ্ঞতা বা উপকারীর উপকার স্বীকার করা।
(৬) তাওয়াক্কুল- খোদা তা'য়ালার উপর নির্ভর করা।
(৭) তাছলিম- খোদার আদেশ নিষেধকে বিনা আপত্তিতে মান্য করা।
(৮) রেজা- খোদা তা'য়ালার ইচ্ছামতে সন্তুষ্ট থাকা।
(৯) ছবর- ধৈর্য্যশীল হওয়া।
(১০) কেনায়াত- অল্পে তুষ্টি।
এই দশটি বিষয়কে দশটি মাকাম (মাকামাতে আশারা) বলে। পূর্বে বর্ণিত কুরিপু সমূহ বর্জন করা এবং এই দশটি গুণকে অর্জন করাই তরিকতের ও ছুলুকের মূল উদ্দেশ্য। এই সমস্তগুলি সাধিত না হইলে বেলায়েতের পদ লাভ করা অসম্ভব।
- আনিছুত্তালেবীন। [মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহমান হানাফী (রহঃ)] [৫ম খন্ড, তা'লিমাতে মা'রেফাত]
***

Post a Comment

0 Comments